Be a Trainer! Share your knowledge.
Home » Islamic Stories » এক দ্বীনদার মেয়ের আল্লাহর উপর ভরসার গল্প। আল্লাহরউপর তাওয়াক্কুল

এক দ্বীনদার মেয়ের আল্লাহর উপর ভরসার গল্প। আল্লাহরউপর তাওয়াক্কুল

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে EarningBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে EarningBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই EarningBD এর সাথেই থাকুন । এক দ্বীনদার মেয়ের আল্লাহর উপর ভরসার গল্প। আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল। এই ঘটনাটি এক দ্বীনদার মেয়ের। তার বেড়ে উঠা, লালন-পালন হয়েছে সম্পূর্ণ ইসলামি পরিবেশ। সৎকর্ম আর তাকওয়া ছিল তার গায়ের চাদর আর বিছানা। প্রতিটি কথা ও কাজের মাধ্যমে সে বুঝিয়ে দিত, তাকে একদিন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সামনে জবাবদিহি করতে হবে। তার দ্বীনদারিত্ব ছিল চোখে পড়ার মতো। তাকে দেখে, তার সাথে কথা বলে মনে হতো, স্রোতের বিপরীতে হাঁটা গুরাবাহ শ্রেণির কেউ একজন। অতঃপর মহামহিম আল্লাহ একজন পরহেজগার ও সালেহ বান্দাকে তার স্বামী হিসেবে মিলিয়ে দিলেন। তাদের দাম্পত্য জীবন ছিল খুবই সুখের ও আনন্দের। দুজনের উদ্দেশ্যই ছিল এক। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। গোটা তল্লাটে তাদের মতো সুখী দম্পতি আর দ্বিতীয়টি ছিল না। ছিমছাম, অল্পে তুষ্ট এক বরকতময় রাজ্য যেন তাদের পরিবার। একদিন চাকরির কারণে তার স্বামীর ছোট এক শহরে বদলি হয়ে যায়। স্বামীর সাথে সে ঐ শহরে একটি বাসা ভাড়া করে স্বাচ্ছন্দ্য জীবন কাটাতে থাকে। কিছুদিন পর সে গর্ভবতী হয়। প্রথম সন্তানের আগমন নিয়ে তার চোখে নানাবিধ স্বপ্ন। পরিবারে নতুন অতিথি, মাতৃত্বের স্বাদ, তার তরবিয়ত, লালন পালন ইত্যাদি বিষয় চিন্তা করে খুশিতে আত্নহারা হয়ে যায় সে। এভাবে মাসের পর মাস অতিবাহিত হয়। ডেলিভারীর তারিখ এগিয়ে আসার সাথে সাথে তার পেট ব্যাথাও বাড়তে থাকতে। একদিন ব্যাথার কারণে ডাক্তার দেখাতে হলো। ডাক্তার চেকআপ করে এক ভয়ানক খবর দিলো। বাচ্চার যে পজিশন তাতে ডেলিভারী স্বাভাবিকভাবে হওয়া সম্ভব নয়। ক্রিটিক্যাল অবস্থা। নরমাল ডেলিভারিতে কোনভাবেই সম্ভব নয়। বাচ্চা ও মা উভয়ের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। সুতরাং অপারেশন করাতে হবে। একথা শুনে তাদের মুখ শুকিয়ে গেলো। তাক্বদীরকে মেনে নিয়ে তারা শেষমেশ অপারেশন সিদ্ধান্ত নিলো।। ডেলিভারিতে নির্ধারিত দিনে স্বামী বেচারা স্ত্রীকে নিয়ে অপারেশন জন্য শহরের একটিমাত্র হাসপাতালে হাজির হলো। হাসপাতালের ইনচার্জ বললো, ‘মহিলা ডাক্তার ছুটিতে আছেন, চারদিন পর আসবেন। এর আগে তিনি আসতে পারবেন না। এখন অপারেশন করাতে চাইলে পুরুষ ডাক্তার দিয়ে করাতে হবে’। কিন্তু তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনো পুরুষ ডাক্তারের কাছে অপারেশন করাবে না। ওদিকে তার স্ত্রীর অবস্থা বেশ নাজুক। এতো ব্যাথা নিয়ে চারদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। দেরি করলে বাচ্চা ও মা দুজনেরই জীবনে অন্ধকার নেমে আসতে পারে। তার স্বামী সিদ্ধান্ত বদলালো। স্ত্রী ও সন্তানের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে পুরুষ ডাক্তার দিয়েই অপারেশন করাতে রাজী হলো। কিন্তু তার স্ত্রী একজন অপরিচিত পুরুষ ডাক্তার দিয়ে নিজের অপারেশন করাতে রাজী হলো না। সে কাঁদতে কাঁদতে বললো,”আল্লাহর শপথ! এমনটি কখনও হতে পারে না। একজন গায়বে মাহরাম আমার বাচ্চার ডেলিভারি করবে; হায়! আমি যদি এমন হওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করতাম, হায়! আমার মা যদি আমাকে জন্মই না দিতেন”। কোনভাবেই সে এটাকে মেনে নিতে পারছিল না। মহমান্বিত রবের প্রতি তার বিশ্বাস ছিল, তিনি তাকে এমন কঠিন পরীক্ষায় ফেলবেন না। তার স্বামী তার কাঁধে হাত রেখে নরম সুরে বললো, “আমার প্রিয়তমা স্ত্রী! একটু বোঝার চেষ্টা করো। আমার যথেষ্ট পরিমাণ গায়রত আছে। আমার আত্মসম্মানবোধও সায় দেয়না যে, একজন গায়বে মাহরাম পুরুষ তোমার অপারেশন করুক। কিন্তু এখানে জীবন ও মরণের প্রশ্ন। তুমি জানো যে, এমন অবস্থায় অনেক অপছন্দনীয় কাজও জায়েজ হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা তো সাধ্যের অতিরিক্ত কাউকে কষ্ট দেন না”। স্বামীর মুখে সান্ত্বনার বাণী শুনে সে হেসে বললো, ” ও আমার প্রাণের স্বামী! দুনিয়াতে আমার কেউই চিরদিনের জন্য থাকতে আসিনি। আমার মৃত্যু যদি এভাবেই লেখা থাকে তাহলে তাকে আমি স্বাগত জানাই। এরকম মৃত্যুর জন্য আমি খুশি মনে প্রস্তুত আছি। আপনি কি নবী করিম (সাঃ) এর এই হাদিসটি শুনেননি..? তিনি বলেছেন, “নারী যদি নিফাসের কারণে মৃত্যুবরণ করে সে মৃত্যু শাহাদাতের মৃত্যু “। (আল আহাদিসুল মুখতারবাহ লিজজিয়া মাকদেসিঃ ৩/৩০২) এবং তিনি এ ও ইরশাদ করেছেন, ” যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কোনো জিনিস ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তায়ালা তাকে তার উত্তম বিনিময় দান করেন”। (বায়হাকী, শুআবুল ঈমানঃ ৫৭৪৯) ” শুনন! আমাকে বাড়িতে নিয়ে চলুন। আমি আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। তিনিই আমার আশ্রয়স্থল। আমার দুঃখ বেদনা তাঁর কাছেই সমর্পণ করলাম “। স্ত্রী জোটাজুরিতে সে তাকে বাড়িতে নিয়ে এলো। এক প্রকার বাধ্যই হলো নিয়ে আসতে। সুবহানাল্লাহ! বাড়িতে নিয়ে গেলে তার প্রসব বেদনা অনেকাংশেই কমে গেল। একটু বাদে নরমাল পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসব হয়ে গেল। ঘরের মধ্যে থেকে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ ভেসে এলো। আল্লাহ আকবার! ডাক্তার বলেছিল অপারেশন ছাড়া সন্তান ডেলিভারী করলে সমস্যা হবে, অথচ ডেলেভারী এত আসানের সাথে হয়ে গেলো। আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে কিছু চাইলে তিনি কল্পনার বাইরে থেকে তা দিয়ে থাকেন। তিনি তো সকল জ্ঞানের জ্ঞানী। সকল বিজ্ঞের বিজ্ঞ। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ” যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছু জন্য একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন “। (সূরা আত তালাক্ক, আয়াত – ৩) অতঃপর স্বামী স্ত্রী মিলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করল। রবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলল। কান্না মিশ্রিত কণ্ঠে তার স্ত্রী বললো, আমি আপনাকে বলেছিলাম না, নবীজি (সাঃ) বলেছেন, ” যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কোনো কিছু ছেড়ে দেয় আল্লাহ তায়ালা তার উত্তম বদলা দান করেন “। (তথ্যসূত্রঃ আব্দুল মালিক মুজাহিদ, দু’আউ কি কবুলিয়ত কি সুনেহরি কাহানিয়া কিতাবের ভাবানুবাদ। সম্পাদনাঃ রাজিব হাসান) আজকে এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবে আল্লাহ হাফেজ ````
2023-01-31 10:30:54 (1 year ago )

About Author(1)

avatarAtif_Ahmed_Niloy
Author

Visit Now - Q2Ans.rf.gd EarningBD.rf.gd

0 responses to “ এক দ্বীনদার মেয়ের আল্লাহর উপর ভরসার গল্প। আল্লাহরউপর তাওয়াক্কুল ”

    Leave a Reply

    Switch To Header