সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই ভালো আছেন।আমিও অনেক ভালো আছি। যে ফুল ফুটিল মক্কায়, সুবাসিত করিল সারা জাহান। আল্লাহর হাবিব তিনি মুহাম্মাদ (সাঃ)।
জন্ম ও শৈশবঃ
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রের বনি হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ৫৭০ খৃীস্টাব্দে ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম আমিনা এবং পিতার নাম আব্দুল্লাহ।
জন্ম নেয়ার পরেই আমেনা দাদা আব্দুল মুত্তালিবকে খবর পাঠান । আব্দুল মুত্তালিব খুশিতে তখনি শিশু মুহাম্মদ (সাঃ) কে কোলে নিয়ে তার নাম রাখেন মুহাম্মদ ।
দুগ্ধ পান কালঃ
সর্ব প্রথম তাঁকে তাঁর মাতা হযরত আমেনা দুগ্ধ পান করান। অতঃপর আবু লাহাবের বাঁদী ‘সুওয়াইবা’ তাকে দুগ্ধ পান করায়। অতঃপর ধাত্রীর সন্ধান করতে থাকেন। ‘হাওয়াযিন’ গোত্রের বানী সা’দ এর মহিলা হালীমা ছা’দিয়া এই বিরল সৌভাগ্যের অধিকারী হন।
দুধপানকালে হালীমা নবী করীম (সাঃ) এর অলৈাকিক ও বরকতময় অনেক র্দশ্য প্রত্যক্ষ করে । বিবি হালিমার বর্ননা সূত্রে ইতিহাসবিদ ইবনু ইসহাক্ব বলেন যে, বিবি হালীমাহ এবং তার স্বামী তার দুগ্ধপোষ্য শিশু সন্তান সহ বনু সা’দ গোত্রের এক দল মহিলার সঙ্গে অর্থের বিনিময় দুধমান করাবে এমন শিশুর সন্ধানে মক্কা যান । বিবি হলিীমাহ বলেন, আমি আমার একটি সাদা মাদী গাধার পিঠে সাওয়ার হয়ে চলছিলাম ।আমার সঙ্গে উটও ছিল । কিন্তু তার উলানেও দুধ ছিল না। আমার সঙ্গে শিশুটির জন্যও একবিন্দু দুধ ছিল না আমার বুকে । আর আমাদের সাথে গাধাটি ছিলো দূর্বল তাই আমাদের কাফেলার পিছনে পরে থাকতাম ।
তারপর আমাদের দলে এমন কনো মহিলা ছিল না যে যার কাছে শিশু মুহাম্মদ (সাঃ) কে দুধ পপান করানোর প্রস্তাব দেয়া হয়নি । কিন্তু সকলেই তাকে নিতে অস্বীকার করল । দলের সকল মহিলারা একটি করে শিশু সংগ্র করে নিল বিাকি রইলাম শুধু আমি । পরবরতীতে আমি আমার স্বামীকে বললাম , সকলেই দুধপান করানোর জন্য শিশু নিয়ে ফিরছে আরি আমাকে শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে । তার চেয়ে আমি সেই ইয়াতিম ছেলেকেই নিয়ে ফিরে যাই ।
শিশু মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে যখন তাবুতে ফিরে আসি তারপরে দুজন শিশুই দুগ্ধপানকরতে সক্ষম হন । এবং আমার স্বামী উট দোহন করাতে গিয়ে দেখেন তার ওলান দুধে পরিপূর্ন । বাড়ি ফেরার পথে আমাদের বাহন আর আগের মতন দূর্বল ছিল না । সকলে বলতে লাগলে এটিই কি তোমাদের পূরেবর বাহন ।
আমি বল্লাম হ্যা এটিই সেই বাহন যার সওয়ার হয়ে এসেছিলাম ।
আমাদের বকরীগুলো সবসময় উদর ভরে ঘাস খেয়ে আসতো । এবং আমরা সবাই পরিপূর্নভাবে দুধ দোহন করতাম ।
লালন-পাললনের দু-বছর পুরন হতেই শিশুটি বড় এবং সুঠাম দেহের অধিকারী হয়ে যায় ।
দাদা ও চাচার তত্ত্বাবধানেঃ
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) -এর মাতা-পিতার মৃত্যুর পর দাদা আব্দুল মুত্তালিব তাঁর লালন পালনের দায়িত্ব নেন। তিনি তাকে খুব স্নেহ করতেন। এমনকি নিজের ছেলেদের উপরও তাঁকে প্রাধান্য দিতেন।তাকে নিজের আসনে বসাতেন। দাদা আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্তই তিনি তাঁর তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
দাদা আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর চাচা আবু তালিব তাঁর দায়িত্ব নেন। তখন তার বয়স ছিল আট বছর। তিনি চাচা আবু তালিবকে বকরী লালন-পালন ও শাম দেশের ব্যবসার কাজে সহযোগিতা করতেন।
খাদিজা (রাঃ) এর সাথে বিবাহঃ
মুহাম্মদ (সাঃ) এর সততা এবং ব্যবসায়ীগুনাগুন দেখে খাদিজা (রাঃ) তাকে বিবাহের জন্য ইচ্ছা করেন ।
তিনি তার মনের বাসনা তাঁর বান্ধবী নাফীসা বিনতে মুনাব্বিহ এর নিকট ব্যক্ত করলেন এবং বিষয়টি নিয়ে মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিকট আলোচনার জন্য বললেন ।
নাফীসা বিষয়টি মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে বললেন এবং মুহাম্মদ (সাঃ) বিষয়টি সম্মতি জানালেন এবং চাচা আবু ত্বালিবকে জানান । আবু ত্বালিব বিষয়টি খাদিজা (রাঃ) পিতৃবের সাথে আলোচনা করে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
নবুওয়াতী লাভ ও প্রথম কুরআন নাযিলঃ
রাসূল (সাঃ) চল্লিশ বছর বয়সে নবুয়াতী লাভ করেন । তিনি মক্কা থেকে দুই মাইল দূরত্বে অবস্থিত (জাবালে নূর) হেরা গুহায় গিয়ে ধ্যানমগ্ন থাকতেন এবং এখানেই প্রথম কুরআনের আয়াত নাযিল হয় ।
জিবরিল (আঃ)- এর আগমনঃ
তিনি যখন হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ছিলেন তখন আল্লাহর ফেরেস্তা জিবরাইল (আঃ) আগমন করেন ।
জিবরিল (আঃ) তার নিকট আগমন করে বললেন ‘তুমি পড়” । তিনি বললনে পড়ার অভ্যাস নেই আমার । তিনি আবারও বললেন ‘তুমি পড়” তিনি বললনে পড়ার অভ্যাস নেই আমার। তিনি তৃতীয় বার বুকে জরিয়ে নিলেন , তারপর নিনি আবারও বললেন ‘পড়’ তখন রাসূল (সাঃ) পড়তে শুরু করলেন :
পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।
পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু,
যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন,
শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।
ইসলাম প্রচারে আত্ননিয়োগঃ
নবুওয়াতের পরে তিন বছর গোপনে দাওয়াত কাজ করেন রাসূল (সাঃ) । তার প্রথম অবস্থাতে তিনি তার পরিবারে নিকট দাওয়াত প্রচার করেন । তাদের মধ্যে প্রথম ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন নবীপত্নী খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ) বিনতে খুওয়াইলিদ,তার ক্রীতদাস যায়দ বিন হারিসাহ বিন শুরাহবীল কালবী, তার চাচত ভাই ‘আলী বিন আবু ত্বালিব, এবং তার সাওর গুহার সঙ্গী আবু বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) । তারপরে আবু বক্র (রাঃ) ইসলাম প্রচারে অনেক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখেন ।
সাফা পরবতে আহরন: রাসূল (সাঃ) সাফা পহারে উঠে বিভিন্ন গোত্রকে ডাকতে থাকেন , এবং বলতে থাকেন, হে কুরাইশ বংশীয়গণ ! তোমরা বল, আজ আমি তোমাদের যদি বলি পর্বতের ইপর প্রান্ত থেকে একদল তোমাদের ইপর হামলা করতে অপেক্ষা করছে তাহলে কি তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে । তারা সবাই উত্তর দিলেন হ্যাঁ । আপনাকে কখনো মিথ্যা বলতে দেখিনি ।
যদি তাই হয় তা হলে শুনে রাখ আমি তোমাদেরকে কঠোর দন্ডের কথা স্বরণ করিয়ে দেয়ার জন্য প্রেরিত হয়েছি । তোমরা নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর এবং আল্লাহর নিকট নিজেকে সপেঁ দাও । সকল গোত্রকে তিনি সতর্ক করেন ।
অব্যাহত মৃতু যন্রণাঃ
অতঃপর শুরু হল মৃতু যন্ত্রনা । রাসূল রাসূল (সাঃ) পানিতে দু’হাতে পানি নিয়ে নিজের মুকমন্ডল মুছতে মুছতে বলছিলেন, মৃত্যু যন্ত্রনা একটি অত্যন্ত কঠিন বিষয় ।
রাসূল (সাঃ) আয়শা (রাঃ) এর ঘরে মৃত্যু বরন করেন । থখন তার বয়স হয়েছিল তেষট্রি বছর চার দিন ।
(রাসূল (সাঃ) এর জীবনী কয়েক পৃষ্ঠায় লিখে শেষ করা যাবে না । তারপরেও যতটুক সম্ভব তুলে ধরেছি ) লেখক মোকলেছ
0 responses to “ মহানবি (স.) এর জীবন কাহিনী ”