আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন ।। আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।।
বিশ্বনবি ঘোষিত সব রোগের রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়াতে বিভিন্ন ধরনের
রোগ-বালাই থেকে সুস্থ
থাকার ও নিরাপদ জীবনের
জন্য চিকিৎসা ও
প্রতিষেধক হিসেবে ৫টি
জিনিসের কথা বলেছেন।
যেভাবে তিনি পরকালের
সফলতার জন্য মানুষকে
সত্যের পথে ডেকেছেন
এবং পথনির্দেশ করেছেন।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
এসব চিকিৎসা ও
প্রতিষেধক গ্রহণের
বিষয়টি সত্যতার সর্বোচ্চ
মানদণ্ডে প্রমাণিত সত্য।
কেননা মহান আল্লাহ
তাআলা তাঁর ব্যাপারে
কুরআনুল কারিমে ঘোষণা
দিয়েছেন-
‘আর (রাসুলুল্লাহ) প্রবৃত্তির
তাড়নায় (নিজ থেকে)
কোনো কথা বলেন না।
কুরআন ওহি হিসেবে যা
প্রত্যাদেশ হয় তা ব্যতিত।
তাঁকে শিক্ষা দান করে এক
শক্তিশালী
ফেরেশতা।’ (সুরা নাজম
৩-৫)
সুতরাং রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম দুনিয়ার জীবনে
মানুষের জন্য যেসব
চিকিৎসা পদ্ধতি ও
প্রতিষেধকের কথা
বলেছেন, তা প্রত্যক্ষ বা
পরোক্ষভাবে ওহি।
সুতরাং মানুষের জীবনে
যদি দুনিয়ার সব চিকিৎসা
বা প্রচেষ্টা শেষও হয়ে
যায়, তারপরও একজন
মুমিনের জন্য প্রিয় নবি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের দেয়া
দিকনির্দেশনাগুলো মেনে
চলা জরুরি। চিকিৎসা ও
প্রতিষেধক হিসেবে
প্রত্যেক মুমিনের জন্য সেসব
নববি চিকিৎসা অনেক বড়।
আর এসব প্রতিষেধক,
চিকিৎসা, দোয়া, আমল ও
আল্লাহর কাছে আশ্রয়
চাওয়ার মাধ্যমে সুস্থতা
লাভের সুযোগ থেকে যায়।
চিকিৎসা ও প্রতিষেধক
হিসেবে ৫ দিকনির্দেশনা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয় সাল্লাম
ঘোষিত সেসব চিকিৎসা,
প্রতিষেধকের তথ্যই তুলে
ধরা হবে; যা মানুষকে সব
ধরনের রোগ-বালাই থেকে
সব অসুস্থতা থেকে সুস্থ ও
নিরাপদ থাকার কল্যাণ
নিহিত রেখেছেন।
তাহলো-
> কালোজিরা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
কালোজিরাকে শুধু মৃত্যু
ছাড়া সব রোগের মহৌষধ
হিসেবে আখ্যায়িত
করেছেন। কালো জিরার
উপকারিতা
চিকিৎসাবিজ্ঞানেও
প্রমাণিত। হাদিসে
এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা
রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা
করেন, ‘রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন,
‘কালোজিরা ব্যবহার কর।
কালো জিরায় রয়েছে
‘শাম’ ছাড়া প্রত্যেক
রোগের প্রতিষেধক। আর
‘শাম’ হলো মৃত্যু।’ (বুখারি)
সুতরাং হাদিসের ওপর আমল
করে সরাসরি কালো জিরা
যেমন খাওয়া যেতে পারে
তেমনি তা থেকে তেল
বের করে পান করাও যেতে
পারে। কিংবা যে কোনো
খাবারের সঙ্গে মিশিয়েও
খাওয়া যেতে পারে।
> মধু
মধুতে রয়েছে রোগের
প্রতিষেধক। মধু পানে
কোনো মৌসমি রোগ হবে
না। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম নিজেও মধু পান
করা পছন্দ করতেন। মধু
প্রসঙ্গে কুরআন-সুন্নায় সুস্পষ্ট
বর্ণনা রয়েছে। চিকিৎসা
বিজ্ঞানেও মধুর রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতার
বিষয়টি প্রমাণিত। মধু
সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা
বলেন-
‘আপনার পালনকর্তা
মৌমাছিকে আদেশ দিলেন
পাহাড়, গাছ ও উঁচু চালে
আবাসস্থল তৈরি কর, তারপর
সব ধরনের ফল থেকে খাও
আর আপন পালনকর্তার
উম্মুক্ত পথসমূহে চলাচল কর।
তার পেট থেকে বিভিন্ন
রঙের পানীয় নির্গত হয়।
তাতে মানুষের জন্য রয়েছে
রোগের প্রতিকার। নিশ্চয়ই
এতে চিন্তাশীল
সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন
রয়েছে।’ (সুরা নাহল : আয়াত
৬৮-৬৯)
হাদিসের নির্দেশনা
থেকে জানা যায়, প্রত্যেক
ব্যক্তির উচিত প্রতিদিন
এক চামচ করে মধু পান করা।
এটা মানুষকে রোগ-ব্যধি
থেকে মুক্তি দেবে।
হাদিসে এসেছে-
- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন, ‘দুইটি শেফা বা
আরোগ্য লাভের উপায়
অবলম্বন করবে। তার একটি
হলো- মধু আর অপরটি হলো-
কুরআনের
তেলাওয়াত।’ (বুখারি ও
মুসলিম)
- হজরত আবু হুরায়রা
রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা
করেন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, যে
ব্যক্তি প্রত্যেক মাসে তিন
দিন সকালবেলা মধু পান
করবে যে যে কোনো
মারাত্মক মৌসুমি রোগে
আক্রান্ত হবে না।’ (ইবনে
মাজাহ)
- হজরত ইবনে আব্বাস
রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা
করেন, ‘তিনটি জিনিসের
মধ্যে রোগমুক্তি আছে- মধু
পানে, শিঙ্গা লাগানোয়
এবং আগুন দিয়ে দাগ
লাগানোয়। তবে আমি
আমার উম্মাতকে আগুন
দিয়ে দাগ দিতে নিষেধ
করছি।’ (বুখারি)
> হিজামা
হিজামা বা শিঙ্গা
লাগানো সব রোগে
মহৌষধ। হাদিসে পাকে
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
হিজামাকেও রোগের
প্রতিষেধক বলেছেন।
তিনি নিজে হিজামা
গ্রহণ করতেন। তবে
হিজামা গ্রহণের বিশেষ
কিছু সময় রয়েছে। হাদিসে
এসেছে-
- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন, ‘বিশেষ কিছু সময়
রয়েছে যে সময়টিতে
হিজামা গ্রহণ করলে
আল্লাহ তাআলা তাকে সব
রোগ থেকে মুক্তি
দেবেন।’ (জামে)
- হজরত ইবনে আব্বাস
রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা
করেন, ‘তিনটি জিনিসের
মধ্যে রোগমুক্তি আছে- মধু
পানে, শিঙ্গা লাগানোয়
এবং আগুন দিয়ে দাগ
লাগানোয়। তবে আমি
আমার উম্মাতকে আগুন
দিয়ে দাগ দিতে নিষেধ
করছি।’ (বুখারি)
> জমজমের পানি
সহিহ মুসলিমরে এক বর্ণনায়
এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম জমজমের পানিকে
রোগের জন্য ঔষধ বলেছেন।
যেহেতু প্রিয় নবি কোনো
রোগের জন্য তা নির্দিষ্ট
করে বলেননি; সেহেতু
বোঝা যায় যে, সব রোগের
জন্যই জমজমের পানি ঔষধ।
হাদিসের অন্য বর্ণনায়
এসেছে, ‘জমজমের পানি যে
নিয়ত বা উদ্দেশ্যে পান
করা হয়, যদি তো কোনো
রোগ-বালাই থেকে বাঁচার
জন্য হয় তবে আল্লাহ
তাআলা সে নিয়ত বা
উদ্দেশ্য পূরণ করেন। রোগ
থেকে মুক্তি দান করেন। যুগ
যুগ ধরে এ পানির
উপকারিতা প্রমাণিত ও
সত্য।
জমজমের পানির মধ্যে
বিদ্যমান বিশুদ্ধ উপাদান ও
উপকারিতা ওঠে এসেছে
বিজ্ঞানীদের গবেষণায়।
জমজমের পানি পৃথিবীর
সেরা বিশুদ্ধতম পানি।
জাপানি বিজ্ঞানী
ইমোতো মাসারুর গবেষণা
তা ওঠে এসেছে-
- এক ফোঁটা জমজমের
পানিতে যে পরিমাণ
আকরিক পদার্থ থাকে তা
পৃথিবীর অন্য কোনো
পানিতে থাকে না।
- জমজমের পানির গুণগত মান
কখনো পরিবর্তন হয় না।
- জমজমের পানিতে
এন্টিমনি, বেরিলিয়াম,
ব্রোমাইন, কোবাল্ট,
বিস্মুথ, আয়োডিন আর
মলিবডেনামের মতো
পদার্থগুলোর মাত্রা ছিল
০.০১ পিপিএম থেকেও কম।
ক্রোমিয়াম, ম্যাংগানিজ
আর টাইটানিয়াম এর
মাত্রা ছিল একেবারেই
নগণ্য।
- জাপানি বিজ্ঞানীর
পরীক্ষা অনুযায়ী জমজমের
পানির পিএইচ হচ্ছে ৭
দশমিক ৮। যেটি সামান্য
ক্ষারজাতীয়। বিজ্ঞানী
তার পরীক্ষায় আর্সেনিক,
ক্যাডমিয়াম, সীসা এবং
সেলেনিয়ামের মতো
ক্ষতিকর পদার্থগুলো
ঝুঁকিমুক্ত মাত্রায়
পেয়েছেন। যে
মাত্রাগুলোতে মানুষের
কোনো ক্ষতি হয় না।
- সাধারণত পানির কূপে
জলজ উদ্ভিদ জন্মালেও জমজম
কূপে তা জন্মায় না।
- জমজমের পানিতে যেসব
আকরিক পদার্থ পাওয়া
গেছে তার মধ্যে
ক্যালসিয়াম, ফ্লোরাইড,
সোডিয়াম, ক্লোরাইড,
সালফেট, নাইট্রেট,
ম্যাগনেসিয়াম এবং
পটাশিয়াম উল্লেখযোগ্য।
ফ্লোরাইড ছাড়া বাকি
মিনারেলগুলোর মাত্রা
অন্যসব স্বাভাবিক খাবার
পানিতে পাওয়ার মাত্রা
থেকে বেশি।
- মাসারু তার পরীক্ষায়
জমজমের পানির এমন এক
ব্যতিক্রমধর্মী মৌলিক
আকার পেয়েছেন যেটি খুবই
চমকপ্রদ। পানির দুইটি
স্ফটিক সৃষ্টি হয়- একটি
আরেকটির উপরে কিন্তু
সেগুলো একটি অনুপম আকার
ধারন করে।
> আজওয়া খেজুর
আজওয়া মদিনা
মুনাওয়ারার এক ধরবের
বিশেষ খেজুর। দামি এ
খেজুরটি সারা দুনিয়ার
মানুষের কাছে বরকতময় ও
ফজিলতপূর্ণ। কেননা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ
হাতে এ খেজুর রোপন
করেছিলেন। আর তা
রোপনের পেছনে ছিল
আশ্চর্যজনক ও বিস্ময়কর
ঘটনা। আর তাতে রয়েছে
শেফা বা আরোগ্য।
- চিকিৎসা বিজ্ঞানের
তথ্য মতে আজওয়ায় খেজুরে
আছে-
'আমিষ, শর্করা, প্রয়োজনীয়
খাদ্য আঁশ ও স্বাস্থ্যসম্মত
ফ্যাট। এছাড়া ভিটামিন এ,
বি সিক্স, সি এবং কে
দ্বারা ভরপুর। ভিটামিন 'এ'-
এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান
'ক্যারোটিন'ও রয়েছে
এতে। ক্যারোটিন চোখের
সুস্থতার জন্য অত্যন্ত
উপকারী। আরও রয়েছে
স্বাস্থ্যকর উপাদান ফলেট,
নিয়াসিন, থিয়ামিন ও
রিবোফ্লেভিন।
- হাদিসের নির্দেশনায়
আজওয়া খেজুর
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি
যদি প্রতিদিন সকালে
সাতটি আজওয়া খেজুর খায়
তবে ওইদিন মৃত্যু ছাড়া অন্য
কোনো রোগ তার কোনো
ক্ষতি করতে পারে
না।’ (বুখারি)
অন্যবর্ণনায় এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, যে ব্যক্তি
প্রতিদিন সকালে কয়েকটি
আজওয়া খেজুর খাবে, সেই
দিন ও রাত পর্যন্ত কোনো
বিষ ও যাদু তার কোনো
ক্ষতি করবে না।
হজরত সাদ রাদিয়াআল্লাহু
আনহু একবার হৃদরোগে
আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তাকে দেখতে যান এবং
হৃদরোগের চিকিৎসার
নসিহত পেশ করেন-
হজরত সাদ রাদিয়াল্লাহু
আনহু বলেন, ‘আমি অসুস্থ
ছিলাম এবং রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম আমাকে দেখতে
এসেছিলেন। তিনি আমার
বুকের ওপর হাত রাখলেন
তখন আমি হৃদয়ে শীতলতা
অনুভভ করলাম।
তিনি বলেন, তোমার
হৃদরোগ হয়েছে।
এরপর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তাকে আজওয়া
খেঁজুর খেতে দিয়ে বললেন,
তুমি সাতদিন আজওয়া
খেজুর খাবে তাহলে তুমি
পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে
যাবে।’ (আবু দাউদ)
মহান আল্লাহ তাআলা
উল্লেখিত পাঁচটি
জিনিসের মধ্যে বিশেষ
শেফা বা রোগ-মুক্তি
রেখেছেন। এ সবই নববি
চিকিৎসা বা প্রতিষেধক।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম
উম্মাহকে যথাসাধ্য
নিয়মিত উল্লেখিত নববি
চিকিৎসা গ্রহণ করার
মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ
থাকার তাওফিক দান করুন।
হাদিসের ওপর যথাযথ আমল
করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।
সবাই ভালো থাকবেন । সুস্থ থাকবেন । আর ভালো কিছু শিখতে * জানতে Ask-Ans.Wapaxo.Com এ ভিজিট করবেন । **** আল্লাহ হাফেজ ****
Good Post